রোজা রাখার নিয়ত । রোজার নিয়ত বাংলা

রোজা রাখার নিয়ত: আসসালামু আলাইকুম আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। রমজান হিজরি ক্যালেন্ডারের নবম মাস। প্রাক-ইসলামী যুগেও এটি একটি পবিত্র মাস হিসাবে বিবেচিত হত এবং এটি ছিল যুদ্ধবিরতি মাসের শেষ মাস। পবিত্র কোরআনে রমজান মাসের কথা বলা হয়েছে।পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে রমজান মাসে লাইলাতুল কদরে। রমজান মাসে রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য ফরজ। রোজার নিয়ত একটি অত্যন্ত পবিত্র কাজ।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজাগুলো রাখে, তার আগের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। রোজা শুদ্ধ করার জন্য সঠিক পন্থায় রোজার নিয়ত জানতে হবে। তাই  আজকে এই পোস্টে  আমরা রোজা রাখার নিয়ত আরবি, রোজা রাখার বাংলা নিয়ত , ইফতারের দোয়া সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন শুরু করা যাক:

রোজা রাখার নিয়ত আরবি, রোজার নিয়ত বাংলা, ইফতারের দোয়া, রোজা রাখার নিয়ত সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, roja rakhar niyot, biborun.com

রোজার নিয়ত একটি অত্যন্ত পবিত্র কাজ। তাই ফজরের আগে সেহরি খেয়ে রোজা শুরু করতে হবে এবং সন্ধ্যায় ইফতারের মাধ্যমে রোজা শেষ করতে হবে। তবে এই দুই সময়ে নিয়ত ও দুআ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ সেহরির পর রোজার নিয়ত করতে হবে এবং ইফতারের আগে নামাজ আদায় করে ইফতার শুরু করতে হবে। রোজা রাখার জন্য আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। আপনি রোজা রাখার আগে প্রার্থনা করতে পারেন যাতে আপনি রোজা সুস্থ রাখতে পারেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি হাদিসে তিন ধরনের লোকের ভাগ্যকে দুর্ভাগ্য বলেছেন। তাদের মধ্যে আছে তারা, যারা রমজান মাস পেয়েও নিজেদের গুনাহ্ মাফ করাতে পারল না।

রোজা রাখার নিয়ত আরবি :

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

  • রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
  • অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

রোজা রাখার  বাংলা নিয়ত

  • হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের রোজার নিয়ত করছি, যা আপনার সন্তুষ্টির জন্য ফরজ করা হয়েছে। অতএব,আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।

ইফতারের দোয়া

بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

  • বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
  • অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিজের মাধ্যমে ইফতার করছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)

আরো পড়ুন :- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাতুল ফেরদাউসআল্লাহুম্মা আফিনি ফি বাদানি আরবি  । জাহান্নাম থেকে আশ্রয় এবং জান্নাত চাওয়ার দোআ কৃপণতার ব্যাপারে আমল

রোজা রাখার আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

  • এর বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুমা গদাম মিং শাহরি রমাদ্বানাল মুবারকি ফারদ্বল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্বব্বাল মিন্নি ইন্নাকা আংতাস সামিউল আলিম।
  • বাংলায় অর্থ: হে আল্লাহ, আগামীকাল পবিত্র রমজান মাসে তোমার পক্ষ থেকে ফরজ করা রোজার নিয়ত করলাম, অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
  • বাংলায় নিয়ত: হে আল্লাহ! আপনার সন্তুষ্টির জন্য আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের ফরজ রোযা রাখার নিয়ত করছি। আমার পক্ষ থেকে আপনি তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাত।

ইফতারের দোয়া

ইফতারের আগে ইফতার সামনে নিয়ে এই দোয়া পড়তে হয়: بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

  • বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
  • অর্থ: হে আল্লাহ, আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিজের মাধ্যমে ইফতার করছি।
  • ইফতারের বাংলা নিয়ত: হে আল্লাহ, আমি আপনার নির্দেশিত মাহে রমজানের ফরজ রোজা শেষে আপনারই নির্দেশিত আইন মেনে রোজার পরিসমাপ্তি করছি ও রহমতের আশা নিয়ে ইফতার শুরু করছি। তারপর ‘বিসমিল্লাহি ওয়াআলা বারাকাতিল্লাহ বলে ইফতার করা।

নিয়ত সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

আরবী বা বাংলা ভাষায় নিয়ত উচ্চারণ করা জরুরী নয়। এ প্রসঙ্গে ফাতাওয়ায়ে শামীতে এসেছে, “আভিধানিক সূত্রে নিয়্যত হলো ‘আজম’।” আর ‘মনের দৃঢ় সংকল্প’কে আজম বলা হয়।

কিন্তু রোজার নিয়তে ফরজ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। অনেকে রোজার নিয়ত বলেন না বা কোনো মানসিক সংকল্প করেন না। মুখে রোজা রাখার প্রচলিত নিয়ত অর্থাৎ আরবি ও বাংলা শব্দ উচ্চারণ করার পরও যদি অন্তরে রোজা রাখার দৃঢ় সংকল্প না থাকে তাহলে নিয়ত হবে না। তাই রোজা রাখতে হবে অন্তরের সংকল্পে।

সুতরাং মূল কথা হলো- রোজার নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত করতে হবে। মুখে উচ্চারণ করার পরও অন্তরে একনিষ্ঠ সংকল্প রাখতে হবে। তবেই রোজা আদায় হবে। আল্লাহ্‌ তাআলা প্রত্যেক মুসলিমকে রোজা রাখার তৌফিক দান করুন।

শেষ কথা:

প্রিয় পাঠক, আজকে এই পোস্টে  আমরা রোজা রাখার নিয়ত আরবি, রোজা রাখার বাংলা নিয়ত, ইফতারের দোয়া সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি বুঝতে অসুবিধা হয়নি। এবং আপনি নিবন্ধটি পছন্দ করেছেন। এই বিষয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।

Tag: রোজা রাখার নিয়ত আরবি, রোজা রাখার বাংলা নিয়ত , ইফতারের দোয়া, roja rakhar niyot, biborun.com

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top