প্রস্রাবের আগে ও পরে পাতলা বীর্যের অনিচ্ছাকৃত নিঃসরণকে ধতু ক্ষয় বলে। প্রস্রাবের উপর একটু চাপ দিলেই এমন হয়। প্রথমত, ধাতু ক্ষয় হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এক সময় শরীর নিস্তেজ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যা শেষ পর্যন্ত একটি ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। এই সমস্যাগুলো বর্তমান জেনারেশনে অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু লজ্জায় কাউকে কে বলতে পারেন না।
তাই এ সকল সমস্যার সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমরা কেন ধাতু ক্ষয় হয়, ধাতু ক্ষয় লক্ষণ, প্রসাবে ধাতু ক্ষয় সমাধান ও ধাতু ক্ষয়ের সিরাপ কি কি রয়েছে ইত্যাদি সকল বিষয় নিয়ে আজকে প্রতিবেদনে আলোচনা করব। আশা করি প্রতিবেদনটি মনোযোগসহ পরলে আপনাদের উপকারে আসবে। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন প্রতিবেদনটি শুরু করা যাক:
কেন ধাতু ক্ষয় হয় ?
বিভিন্ন কারণে ধাতু ক্ষয় হতে পারে যেমন পুরুষত্বহীনতা, অত্যধিক সেক্স, অর্শ,অতিরিক্ত হস্তমৈথুন, স্বপ্ন দেখা, নারী সম্পর্কে খুব বেশি চিন্তা করা, কোষ্ঠকাঠিন্য, সিফিলিস, গনোরিয়া এবং অন্যান্য কারণে।
প্রসাবে ধাতু ক্ষয় লক্ষণ
মূত্রত্যাগের আগে ও পরে তরল পদার্থের অনিচ্ছাকৃত নিঃসরণকে ধতু ক্ষয় বলে। এটি প্রস্রাবের উপর সামান্য চাপ দিলেই হয়। প্রসাবে ধাতু ক্ষয় হলে, প্রথমত শরীর দুর্বল হয়ে যায়। এছাড়াও, খাবারের প্রতি ঘৃণা, অনেক সময় বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে অন্ধকার বা ঝাপসা দৃষ্টির সমস্যা হয়। সহবাসে অনীহা এবং এক পর্যায়ে সহবাস থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকা। কারও সাথে কথা বলার আগ্রহ কম, অন্ধকার পরিবেশ পছন্দ করে এবং মহিলাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হতে পারে। উল্লেখ্য, ধাতু ক্ষয় হলে শরীরের ওজন কমে যায় এবং শরীর শুকিয়ে যায়।
প্রসাবে ধাতু ক্ষয় একটি সাধারণ রোগ কারণ আমাদের অণ্ডকোষ ক্রমাগত বীর্য তৈরি করে। তবে এ রোগকে গুরুত্ব না দিলে পরবর্তীতে তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। প্রসাবে ধাতু ক্ষয় বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে সাধারণ। অনেক সময় গনোরিয়া, সিফিলিসে আক্রান্ত হলে ধাতু ক্ষয় হয়ে যায়।
ধাতু ক্ষয় রোধের সমাধান কয়টি
- হস্তমৈথুন বন্ধ করুন।
- ঢিলেঢালা সুতির কাপড় পরুন।
- চিন্তা করা বন্ধ করুন এবং ধ্যান অনুশীলন করুন।
- অ্যালকোহল বা অ্যালকোহলযুক্ত তরল এড়িয়ে চলুন।
- নারী শরীর সম্পর্কে চিন্তা করা বন্ধ করুন।
- পর্নোগ্রাফি বা 18+ সিনেমা এড়িয়ে চলতে হবে।
- ঘুমানোর আগে গরম তরল খাবার এড়িয়ে চলুন।
- যৌন সম্পর্কে চিন্তা করা এবং রাতে ম্যাসাজ করা এড়িয়ে চলুন।
- বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করতে হবে এবং মিশতে হাবে ।
- কোনো জটিল রোগ লুকিয়ে না রেখে দ্রুত চিকিৎসা করুন।
আরো পড়ুন :- বীর্য ক্ষয় রোধের উপায় । ধাতু ক্ষয় রোগের হোমিও ঔষধ। প্রসাবের পর ধাতু বের হয় কেন । মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় । পেগনেট টেস্ট করার নিয়ম
ধাতু ক্ষয়ের সিরাপ
ধাতু ক্ষয়ের সিরাপ খুবই একটি ওষুধ যা সেবনের মাধ্যমে ধাতু ক্ষয় দ্রুত নিবারণ করা যায়। নিচে কিছু ধাতু ক্ষয়ের সিরাপ উল্লেখ করা হলো: নেপ-জিন (জিনসিন)/ জিনসেং৪৫০ মিলি সিরাপ (হ্যানিম্যান হোমিও), ডামিয়া সিরাপ (ঢাকা হোমিও/ডীপলেড ফার্মালকো) খেতে পারেন।
এছাড়াও, ধাতু ক্ষয়ের সিরাপ আরো রয়েছে। নিচের এই ওষুধগুলোও ধাতু ক্ষয় রোগ নিবারনে খুব ভালো কাজ করে। (নারভেন্ট, নিউটোন, লিবিডেক্স, এনডিউরেক্স)
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ওষুধ কেনা বা খাওয়ার আগে অবশ্যই যৌন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
প্রসাবে ধাতু ক্ষয় সমাধান
অনিচ্ছাকৃত প্রসাবে ধাতু ক্ষয় নামই হলো ধাতু দুর্বলতা। এই ধরনের সমস্যায়কম উদ্দীপনা বা স্বপ্নদোষ ছাড়াই বারবার বীর্যপাত হয়। সাধারণভাবে বলতে গেলে, এটি শরীরের একটি মাত্র রোগ নয় বরং অন্যান্য রোগের লক্ষণ/ কারণ। বয়ঃসন্ধির কাল সময় অস্বাভাবিক প্রসাবে ধাতু ক্ষয় এই সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যার প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত যৌনতা। আবার অনেক সময় সিফিলিস, গনোরিয়ার উপসর্গে হলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সঠিক চিকিৎসায় প্রসাবে ধাতু ক্ষয় সমস্যাটি দূর হয়ে যায় এবং রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে। তাতে দীর্ঘদিন ওষুধ খাওয়ার দরকার নেই। তাই যদি কেউ এই ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হন, তাহলে সেই অতিরিক্ত উত্তেজক ও ক্ষতিকর ওষুধ সেবন করে আপনার যৌনজীবনকে ব্যাহত না করে সঠিক চিকিৎসা নিন, আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এবং দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।
প্রসাবে ধাতু ক্ষয় রোধের উপায়
- কচি সিমুল গাছের মূল ধাতু ক্ষয় দূর করতে চুম্বকের মতো কাজ করে। কচি সিমুলের শিকড় ভালো করে পরিষ্কার করে ছোট ছোট টুকরো করে পানিতে মিশিয়ে সাত দিন সেবন করলে প্রসাবে ধাতু ক্ষয় ও বীর্যপাত দ্রুত দূর হয়।
- একটি ছোট পেঁয়াজ লবণ দিয়ে চিবিয়ে নিন এবং এক গ্লাস দুধ পান করুন। দুই থেকে তিন সপ্তাহ সেবন করলে বীর্য গাঢ় ও শক্তিশালী হবে এবং প্রসাবে ধাতু ক্ষয় দূর হবে।
- প্রতিরাতে এক গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ ইসুবগুল ভুষি ভিজিয়ে রাখুন এবং পরদিন সকালে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে খালি পেটে খান। এটি 15 দিন ধরে খেলে আপনার প্রসাবে ধাতু ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
- আমলকি প্রসাবে ক্ষয় রোধে খুবই কার্যকরী। তাই প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানিতে ১ চা চামচ আমলকির গুঁড়া ও ২ চা চামচ আখ মিডা মিশিয়ে পান করলে প্রসাবে ধাতু ক্ষয় দূর হবে।
- আগের দিন ও রাতে আধা চা-চামচ সামান্য পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে 1 পোয়া কাঁচা ছাগলের দুধ ও কিছু চিনি মিশিয়ে খালি পেটে সেবন করুন। এই ওষুধটি নিয়মিত ২/৩ সপ্তাহ খেলে শক্তি বাড়বে এবং ধীরে ধীরে ধাতুর ঘাটতি পূরণ হবে।
- 50 গ্রাম শুকনো আমলকি ভালো করে পিষে পরিষ্কার কাপড়ে ছেঁকে নিতে হবে এবং কিছু পরিমাণ আমলকি গুঁড়ো করে রস বের করতে হবে। আমলকির গুঁড়া আমলকির রসের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে অল্প আঁচে শুকিয়ে আবার রোদে শুকাতে হবে। এবার সেই পাউডারের সাথে মিছরি গুঁড়ো করে খানিকটা মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে প্রসাবে ধাতু ক্ষয় দূর হয়।
- রাতে 3 চামচ ছোলা ধুয়ে ভিজিয়ে রাখার পর সকালে ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে খালি পেটে চিবিয়ে খান। অন্তত এক মাস এভাবে খেলে প্রসাবে ধাতু ক্ষয় রোগ সেরে যায়।
- কালো তিল ও আমলকি সমপরিমাণে পিষে ভালো করে ছেঁকে নিন, ১ তোলা মুখে পিষে প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করুন। এভাবে 21 দিন নিয়মিত পান করলে আপনার গোপন সমস্যা দূর হবে।
- সমপরিমাণ আম, জাম ও তেঁতুলের বীজ নিয়ে ভালো করে পিষে নিন। ১ চা চামচ মুখে গুঁড়ো করে প্রতিদিন রাতে শোবার সময় এক গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করুন। এভাবে 3 সপ্তাহ সেবন করলে আপনার লুকানো প্রসাবে ধাতু ক্ষয় সমস্যা দূর হবে।
- প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ১০টি কালোজিরার সঙ্গে একটি পেঁয়াজ চিবিয়ে খেলে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত তারুণ্যের শক্তি বজায় থাকে।
শেষ কথা:
প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা কেন ধাতু ক্ষয় হয়, ধাতু ক্ষয় লক্ষণ, প্রসাবে ধাতু ক্ষয় সমাধান ও ধাতু ক্ষয়ের সিরাপ কি কি রয়েছে ইত্যাদি সকল বিষয় আর্টিকেলে আলোচনা করেছি। আশা করি বুঝতে অসুবিধা হয়নি। এবং আপনি নিবন্ধটি পছন্দ করেছেন। এই বিষয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।
আরো পড়ুন :- ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রেগনেন্সি টেস্ট । মাসিকের আগে সাদা স্রাব গর্ভাবস্থার লক্ষণ । মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় । পেগনেট টেস্ট করার নিয়ম । কাঠি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম
Tag: কেন ধাতু ক্ষয় হয়, ধাতু ক্ষয় লক্ষণ, প্রসাবে ধাতু ক্ষয় সমাধান, ধাতু ক্ষয়ের সিরাপ কি কি রয়েছে, dhatu khoyer shirap ki ki, biborun.com
