আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন ওয়াস সালাতু আরবি: আসসালামু আলাইকুম আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। কোনো কিছু চাওয়ার আগেই আল্লাহর প্রশংসা এবং প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওপর দরূদ পাঠ করে ধিরস্থিরভাবে নিজের প্রয়োজনের কথা আল্লাহর কাছে তুলে ধরা। তাতে দোয়া দ্রুত কবুল হয়। এ রকমই বলেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তবে প্রয়োজন তুলে ধরার আগে আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর দরূদ পড়ার কথাও বলেছেন তিনি। আজকে এই পোস্টে আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন ওয়াস সালাতু আরবি অর্থ নিয়ে আলোচনা করব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক:
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন: (আরবি ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ) কুরআনের প্রথম সূরার দ্বিতীয় আয়াত। এটা এমন একটি বাক্য যা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মুসলমানরা তাদের জীবনে সবচেয়ে বেশিবার পুনরাবৃত্তি করে থাকে। এই আয়াতটি আল-ফাতিহার অন্তর্গত, যে সূরাটি নামাযে পাঠ করা বাধ্যতামূলক এবং তাই এটি প্রতিদিন পাঠ করা হয়। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়ে তেলাওয়াত করা ছাড়াও মুসলমানরা তাদের প্রতিদিনের জীবনের অন্যান্য ক্রিয়াকলাপের সময় এই বাক্যটি পাঠ করে থাকে।
মুসলমানরা কোন কার্য সম্পাদনের পূর্বে বিসমিল্লাহ তেলাওয়াত করে; এবং যখন তারা কাজ শেষ করে, তখন তারা এই আয়াত পাঠ করে আল্লাহকে তাঁর অনুগ্রহের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে। মুসলমানদের আল্লাহর নিয়ামতের জন্য তাঁর (আল্লাহর) প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়ার জন্য সচেষ্ট হতে শেখানো হয় এবং এভাবে এই বাক্যটি পরমেশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা উপলব্ধি এবং ধন্যবাদের বিবৃতি হিসেবে কাজ করে
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন ওয়াস সালাতু আরবি
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন ওয়াস সালাতু ওয়া আসসালামু আলা রাসুলিহিল কারীম। আসসালামু আলাইকুম। আল্লাহ আযযা ওয়া জাল কুরআন মাজীদে বলেছেন,
“যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ।” [আল কুরআন ২:২৬১]
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং যা আমি তোমাদের জন্যে ভূমি থেকে উৎপন্ন করেছি, তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় কর এবং তা থেকে নিকৃষ্ট জিনিস ব্যয় করতে মনস্থ করো না।” [আল কুরআন ২:২৬৭]
“তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তিনি তোমাদেরকে যার উত্তরাধিকারী করেছেন, তা থেকে ব্যয় কর। অতএব, তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও ব্যয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে মহাপুরস্কার।” [আল কুরআন ৫৭:৭]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের শিখিয়েছেন, নিজের ভাই এর দিকে তাকিয়ে দেয়া ছোট্ট এক চিলতে মুচকি হাসিও হতে পারে সাদাকা। তাই মুসলিম হিসেবে নিজের মুখের হাসি আমরা সাদাকা তো করবই, সাথে অন্যের মুখেও যাতে হাসি ফোটে সেই লক্ষ্যে আল্লাহর দেয়া রিযিক থেকে ব্যয় করাও আমাদের দায়িত্ব।
“সাদাকা” এমন একটি অলাভজনক জনহিতকর প্রতিষ্ঠান, যারা ইনশাআল্লাহ নিশ্চিত করবে আপনার আমার সাদাকা করা অর্থ ও সম্পদ যাতে ইসলাম নির্দেশিত পন্থায় যোগ্য প্রাপকের কাছে পৌঁছে যায়।
আল্লাহ বলেন, “ব্যয় কর হে আদম সন্তান! আমি তোমার জন্য ব্যয় করব।”
[সহীহ আল বুখারী : ৫৩৫২]
আল্লাহ আমাদের উদ্যোগ এবং সকলের সাহায্য কবুল করে নিক।
আরো পড়ুন :- রোজা রাখার নিয়ত । আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাতুল ফেরদাউস । আল্লাহুম্মা আফিনি ফি বাদানি আরবি । রোজার সময়সূচি ২০২৪ । স্বপ্নে স্বর্ণ দেখলে কি হয় ইসলামিক ব্যাখ্যা
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন ওয়াস সালাতু আরবি
অন্তরে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে একনিষ্ঠভাবে দোয়া করা। দোয়ার পরিপূর্ণ সফলতা লাভে খাঁটি নিয়তে কেবলামুখী হয়ে দোয়া করতে স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
কোনো কিছু চাওয়ার আগেই আল্লাহর প্রশংসা এবং প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওপর দরূদ পাঠ করে ধিরস্থিরভাবে নিজের প্রয়োজনের কথা আল্লাহর কাছে তুলে ধরা। তাতে দোয়া দ্রুত কবুল হয়। এ রকমই বলেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তবে প্রয়োজন তুলে ধরার আগে আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর দরূদ পড়ার কথাও বলেছেন তিনি। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তি তার নামাজের মধ্যে দোয়া করতে দেখলেন। ওই ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করল না এবং আল্লাহর নবি ওপর দরূদ পড়ল না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, ‘হে মুসাল্লি! (নামাজি) তুমি দোয়া করতে তাড়াহুড়া করলে। অতঃপর তাকে দোয়া করার নিয়ম শিখিয়ে দিলেন।
পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য একজনকে দোয়া করতে শুনলেন। ওই ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করল এবং নবির ওপর দরূদ পড়ল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তুমি দোয়া কর, তোমার দোয়া কবুল করা হবে। তুমি যা চাও তোমাকে তা দেয়া হবে।’ (নাসাঈ, তিরমিজি, মিশকাত)
অন্য হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন, ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার কাছে চাই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি একমাত্র তুমিই আল্লাহ। তুমি ব্যতিত প্রকৃত কোনো মাবুদ নেই। তুমি একক নিরপেক্ষ মুখাপেক্ষিহীন। যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্ম নেননি। তার সমকক্ষ কেউ নেই।
তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘অবশ্যই সে আল্লাহকে এমন নামে ডেকেছে যে নামে চাওয়া হলে দেয়া হয়। প্রার্থনা করা হলে কবুল করা হয়।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, বুলুগুল মারাম)
সুতরাং মানুষ যখন আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাইবে কিংবা দোয়া ও মোনাজাত করবে, তখন তারা আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরূদ পাঠ করে তার পর কাঙ্ক্ষিত বিষয়ের আবেদন করবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন দোয়া করতেন তখন এভাবে আল্লাহর প্রশংসা করতেন-
اِنَّ الْحَمدَ للهِ نَحْمَدُهُ وَ نَسْتَعِيْنُهُ مَنْ يَهْدِهِ اللهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَ مَنْ يُّضْلِلْ فَلَا هَادِىَ لَهُ وَ أَشْهَدُ أَنْ لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَ رَسُوْلُهُ
উচ্চারণ : ইন্নাল হামদা লিল্লাহি নাহমাদুহু ওয়া নাসতায়িনুহু মাই ইয়াহদিহিল্লাহু ফালা মুদিল্লা লাহু ওয়া মাই ইয়ুদলিল ফালা হাদিয়া লাহু ওয়া আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’ (মুসলিম, মিশকাত, তিরমিজি, আবু দাউদ)
যারা দোয়ার সময় এটি পড়তে পারবে না তারা চাইলে ছো্ট্ট এ প্রশংসা করতে পারেন। আর তাহলো-
نَحْمَدُهُ وَ نُصَلِّىْ عَلَى رَسُوْلِهِ الْكَرِيْمِ
উচ্চারণ : নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা রাসুলিহিল কারিম।
اَلْحَمْدُ للهِ وَحْدَهُ وَ الصَّلَاةُ وَ السَّلَامُ عَلَى مَنْ لَّا نَبِيَّ بَعْدَهُ
উচ্চারণ : আলহামদুল্লিাহি ওয়াহদাহু ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা মান লা নাবিয়্যা বাদাহু।
সম্ভব হলে দোয়া করার আগে দু রাকাআত নামাজ পড়ে দোয়া করা। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি তা বর্ণনা করেন। এক বর্ণনায় এসেছে-
‘মানুষ কোনো গোনাহ করার পর উত্তমভাবে ওজু করে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।’ (আবু দাউদ)
শেষ কথা
প্রিয় দর্শক বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আমরা আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন ওয়াস সালাতু আরবি, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন সূরা ফাতিহা, ইন্নাল হামদা লিল্লাহ,ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ,আম্মা বা’দ, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন এর অর্থ, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন এর তারকিব নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটা বুঝতে আপনাদের কোন অসুবিধা হবে না এবং আপনারাও উপকৃত হয়েছে। এই সম্বন্ধে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টে করুন। শীঘ্রই আপনার কমেন্ট মূল্যায়ন করা হবে ইনশাল্লাহ।
আরো পড়ুন :- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাতুল ফেরদাউস । আল্লাহুম্মা আফিনি ফি বাদানি আরবি । জাহান্নাম থেকে আশ্রয় এবং জান্নাত চাওয়ার দোআ । কৃপণতার ব্যাপারে আমল । অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া । উত্তম জীবিকা পাওয়ার দোয়া । আল্লাহুম্মা আকফিনি বিহালালিকা আন হারামিকা । দরিদ্রতা থেকে মুক্তির দোয়া
Tag: আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন ওয়াস সালাতু আরবি, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন সূরা ফাতিহা, ইন্নাল হামদা লিল্লাহ,ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ,আম্মা বা’দ, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন এর অর্থ, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন এর তারকিব, Alhamdulillahi Rabbil Alamin Was Salatu Arabic, biborun.com