শুকনো কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ

শুকনো কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ কি কি তা জানতে পাঠকদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। কারন, পারদ নামার পরই বাংলায় কাশি বেড়েছে। আর সেই কারণেই আজকাল অফিস থেকে শুরু করে বাস, ট্রাম, লঞ্চ, সিনেমা হল, বাজার- সবখানেই মুখরিত শুকনো কাশির গুঞ্জন। আর এই দৃশ্য দেখে চিন্তিত হয়ে পড়ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এই সমস্যার এখনই সুরাহা না হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

প্রিয় পাঠক, আজ আমি আপনাদের শুকনো কাশির সমস্যার সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলে আমরা শুকনো কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ এবং শুকনো কাশি হলে দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করব । আশা করি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি আপনার সমস্যার সমাধান পাবেন। তো চলুন নিবন্ধটি শুরু করা যাক:-

শুকনো কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ, শুকনো কাশি হলে দূর করার ঘরোয়া উপায়,  sukno kashir homiyo ousud, biborun.com

ডক্টর রজত চ্যাটার্জির মতে, এই শীতে এখনও বৃষ্টি হয়নি। ফলে বাতাসে ধুলাবালি ও ধোঁয়ার মাত্রা কয়েকগুণ বেড়েছে। আর এসব অ্যালার্জির কারসাজির কারণে অনেকেই কাশির ফাঁদে পড়ছেন। এটি শুকনো কাশির প্রধান কারণ। তাই যাদের ধাতব অ্যালার্জি আছে, তারা এ সময় সতর্ক থাকার চেষ্টা করুন। না হলে সমস্যা বাড়বে, বই কমবে না।

তবে সুখবর হল শুষ্ক কাশির জন্য হোমিওপ্যাথিক  ওষুধের মাধ্যমে তার প্রতিকার রয়েছে। তাই এই সমস্যার ফাঁদে না পড়ে অপ্রয়োজনীয় কাশির ওষুধ না খেয়ে হোমিওপ্যাথির উপর নির্ভর করার পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতা হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডঃ রজত চট্টোপাধ্যায়। চলুন জেনে নিই তার কাছ থেকে এই সমস্যার সমাধানের উপায়।

নাকের সর্দি বসে গিয়ে শুকনো কাশি হলে করণীয় কি?

যদি আপনার সর্দি এবং কফের কাশির সাথে প্রচুর শ্লেষ্মা, বমি বা বমি বমি ভাব থাকে, তাহলে কাশির তীব্রতা কমে না যাওয়া পর্যন্ত প্রতি 3 ঘন্টায় একবার Epicac 3X বা 6 দিতে হবে।

epicac এর কাশি ছবি একটু বেশি তীব্র। মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে আসছে। বুক ও গলায় সাঁই সাঁই শব্দ হচ্ছে। একটু শ্বাসকষ্ট। Ipicac ভাল কাজ করে যখন একটি শিশুর বুকে বা শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মা, গলা ব্যথা, কখনও কখনও বা বমি হয়।

সর্দি নাক কিছুটা মোটা ও আঠালো হলে বা নাক বা মুখ থেকে লম্বা দড়ির মতো শ্লেষ্মা ঝুলে থাকলে ক্যালি বিক্রোম 6 সবচেয়ে কার্যকরী হোমিওপ্যাথিক ওষুধ।

যদি ঠাণ্ডা লেগে যায় এবং গলায় আঠালো শ্লেষ্মা সৃষ্টি হয়, যদি শ্লেষ্মা সহজে বের না হয়, তাহলে কালী বিক্রম কণ্ঠনালীর বিরক্তিকর টিস্যুকে শান্ত করবে। শ্লেষ্মা সহজেই দূর হবে। শ্বাসকষ্ট হলে তা উপশম করে রোগীকে সুস্থ করে তোলে।

শুকনো কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ

  • শীতকালে শুষ্ক কাশির সবচেয়ে ভালো ওষুধ হল রুমেক্স।
  • সিজনাল ফ্লু সংক্রান্ত সমস্যায় কস্টিকাম দারুণ কাজ করে।
  • শিশুদের অ্যালার্জিজনিত শুকনো কাশি হলে সিনা ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
  • পরিবারে যক্ষ্মা রোগের ইতিহাস থাকলে, অতিরিক্ত কাশি থাকলে, রাতে ঘুমানোর পর কাশি বেড়ে গেলে- ড্রোসেরা ওষুধ খুবই কার্যকর।
  • অনেক সময় গ্যাস-অম্লতার কারণেও কাশির প্রকোপ বেড়ে যায়। আর এই সমস্যার সবচেয়ে ভালো প্রতিকার হল পালসাটিলা।

Nax Vamika 6 ভাল কাজ করবে যদি নাক বন্ধের কারণে শিশুটি স্তনে আটকাতে না পারে। Nax ব্যর্থ হলে Sambucus 1X, 3X সাহায্য করবে। ঠাণ্ডা একেবারেই ভালো না হলে Mercurius 6 সেবন করা উচিত।

অনেক সময় সর্দি শুকিয়ে যাওয়ার পর শিশুর নাক দিয়ে পানি পড়া বন্ধ হয়ে যায়। শ্বাস নিতে অসুবিধা, স্তন শক্ত হওয়া এবং ঘুমের ব্যাঘাত।

সেক্ষেত্রে বুকে বা গলার নিচের অংশে শ্বাসকষ্টের শব্দ হলে, শ্লেষ্মা নিঃসরণ বা নাক শুকিয়ে গেলে, উপসর্গ অনুযায়ী ডালকামারা ৬, সাম্বুকাস ৩এক্স বা ন্যাক্স ভম ৬ সেবন করলে শিশুর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে। ঠান্ডায় নাক বন্ধ।

যদি নাক আটকে থাকে এবং বুকের আওয়াজ হয় – Antim Tart 6, যদি নাক দিয়ে তরল সর্দি বন্ধ থাকে – Chamomilla 6 বা 12 লাগবে। সর্দি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে, বুকে গরম সরিষার তেল লাগালে শ্লেষ্মা তরল হয়ে যায়। তুলো দিয়ে ধীরে ধীরে চুলকানি মুছে ফেললে ব্যথা কমে যাবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:  প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এসব ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শুকনো কাশি হলে দূর করার ঘরোয়া উপায়

** স্যালাইন ড্রপ বন্ধ নাক খুলতে জাদুর মতো কাজ করে। অনেক ওষুধের দোকানে স্যালাইন নাকের ড্রপ পাওয়া যায়। শিশুর প্রতিটি নাকের ছিদ্রে ২-৩ ফোঁটা স্যালাইন দিলে নাক পরিষ্কার হবে।

** প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা উচিত। পর্যাপ্ত পানি শ্লেষ্মা পাতলা করতে সাহায্য করতে পারে। ফলে বুকে কফ জমার সমস্যা এড়ানো যায়।

** একটি উষ্ণ এবং বাষ্পযুক্ত ঘরে বাষ্প শ্বাস নেওয়ার জন্য রাখুন বা হালকা গরম জল দিয়ে গোসল করুন। এটি শিশুর শ্লেষ্মা পরিষ্কার করবে এবং শ্বাস নেওয়া সহজ করবে।

** এ সময় শিশুকে মুরগির স্যুপ খাওয়াতে পারেন। এটি প্রদাহ কমিয়ে অবরুদ্ধ নাক উপশম করতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে মুরগির স্যুপ শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে পারে।

**শীতকালে নিয়মিত কালোজিরার তেল দিয়ে  হাত-পা ম্যাসাজ করুন। গলা ও নাকে সামান্য কালোজিরার তেল লাগাতে পারেন। এছাড়া এই তেল অল্প পরিমাণে শিশুকে খাওয়ানো যেতে পারে। সর্দি-কাশির চিকিৎসায় কালোজিরার তেল খুবই কার্যকরী।

** পেয়ারা, টমেটো এবং রসুনের স্যুপ খাওয়াতে পারেন। এতে আপনার বুকে জমে থাকা কফ মলমূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে আসবে।

** অবরুদ্ধ নাকে দুই ফোঁটা লবণ পানির মিশ্রণ দিন। এতে বন্ধ নাক দ্রুত খুলে যাবে। ফলে আরাম বোধ করবেন। এর জন্য একটি পাত্রে আধা চা চামচ লবণ দিয়ে ৪ চা চামচ গরম পানি ফুটিয়ে নিন। একবার ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, এটি অনুনাসিক ড্রপ হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

** গোসল করতে সবসময় হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। গরম পানিতে গোসল করলে ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি কমে যায়।

** মাথার নিচে একটি তোয়ালে বা কাপড় গড়িয়ে তাকে ঘুমাতে দিন। এখন প্রতি 30 থেকে 60 মিনিটে দুই বা তিন ফোঁটা দিয়ে নাক পরিষ্কার করুন। ড্রপটি স্থাপন করার পরে, এটি তার পাশে রাখুন এবং তরলটি ঠান্ডা হতে দিন, একটি টিস্যু দিয়ে মুছুন। নাকে কটন বাড ঢোকাবেন না।

** এই সময়ে যতটা সম্ভব ধুলাবালি এবং ধোঁয়া এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। তাই বাড়ির বাইরে বের হলে অবশ্যই মুখে মাস্ক লাগিয়ে নিন। এটি যেমন ধুলো এবং ধোঁয়া প্রতিরোধ করতে পারে, তেমনি কিছু ভাইরাসকেও দূরে রাখবে। এছাড়াও, প্রচন্ড ঠান্ডায় বাইরে যাবেন না। আর যদি একা বের হতেই হয় তাহলে শীতের পোশাক পরতে চাই। আশা করি, এই নিয়মগুলি মেনে চললে আপনি সহজেই শুকনো কাশির ফাঁদ এড়াতে পারবেন।

শুকনো কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ, শুকনো কাশি হলে দূর করার ঘরোয়া উপায়,  sukno kashir homiyo ousud, biborun.com

আরো পড়ুন :- বুকের কফ বের করার সিরাপ গলায় কফ আটকে থাকলে কি করনীয়বুকে কফ জমে শ্বাসকষ্ট হোমিওপ্যাথি ঔষধক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা সঠিক নিয়মবাচ্চাদের কাশির ঔষধের নামশিশুর বুকে কফ জমলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত

নবজাতকের ঠান্ডার ঔষধ

যেসব পরিবারে নবজাতক শিশু রয়েছে তাদের সব সময় বাড়িতে কিছু উপকারী নবজাতকের ঠান্ডার ঔষধ রাখা উচিত। এটি বিভিন্ন জটিলতা এড়াতে পারে। মোহাম্মদ হানিফ, ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু কিডনি রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা

প্যারাসিটামল: প্যারাসিটামল জ্বরের চিকিৎসার জন্য একটি কার্যকর ওষুধ, যা ট্যাবলেট, ড্রপ, সিরাপ, সাপোজিটরি ইত্যাদি আকারে পাওয়া যায়। তবে শিশুদের জন্য সিরাপ এবং সাপোজিটরির বেশি প্রয়োজন।

সাধারণত ১০ কেজি ওজনের শিশুর জ্বর হলে এক থেকে দেড় চা চামচ প্যারাসিটামল সিরাপ দেওয়া যেতে পারে, জ্বরের ওপর নির্ভর করে। আর জ্বর বেশি হলে সাপোজিটরি আড়াই, দুই তৃতীয়াংশ বা পুরো। সাপোজিটরি একটু বেশি দিতে হয়, কারণ অনেক সময় বের হয়।

অ্যান্টিহিস্টামাইনস: সর্দি এবং অ্যালার্জির জন্য এই ওষুধটি খুবই উপকারী। ফেক্সোফেনাডিন বা অন্য সিরাপ দেওয়া যেতে পারে।

ড্রপ: নাকের ড্রপ রাখতে হবে। তবে বেশির ভাগই লবণাক্ত পানি ব্যবহার করা হয়। Nozomist, Norsol, Solo ইত্যাদি হিসাবে বাজারজাত করা হয়েছে।

ক্যালামাইন লোশন: কোনো কিছু কামড়ালে বা অ্যালার্জি থাকলে সঙ্গে সঙ্গে লাগালে খুবই উপকারী। তবে খেয়াল রাখতে হবে চোখের চারপাশে যেন না যায়।

খাবার স্যালাইন: এটি খুবই উপকারী ওষুধ। এটি শিশুদের বমি, ডায়রিয়া বা ডায়রিয়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। নিওস্যালাইন নামের ওরস্যালাইন বাজারে খুবই জনপ্রিয়।

শেষ কথা:

প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা শুকনো কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ এবং শুকনো কাশি হলে দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি বুঝতে অসুবিধা হয়নি। এবং আপনি নিবন্ধটি পছন্দ করেছেন। এই বিষয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন। আপনার মূল্যবান প্রশ্নের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। ধন্যবাদ

আরো পড়ুন :- বুকের কফ বের করার সিরাপ গলায় কফ আটকে থাকলে কি করনীয়বুকে কফ জমে শ্বাসকষ্ট হোমিওপ্যাথি ঔষধক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা সঠিক নিয়মবাচ্চাদের কাশির ঔষধের নাম  প্রসাবের রাস্তায় চুলকানি মলম । মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় । পেগনেট টেস্ট করার নিয়ম । কাঠি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম

Tag: শুকনো কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ, শুকনো কাশি হলে দূর করার ঘরোয়া উপায়,  sukno kashir homiyo ousud, biborun.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top