রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে ট্রেনের অন্তত ৫টি বগি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ট্রেনে আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এজেন্সির সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পাঁচটি বগি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। বগির ভেতরে লোকজন আছে, তাদের এখনো উদ্ধার করা যায়নি। আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ঘটনাস্থলে রয়েছে। হতাহতের সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান ইত্তেফাক অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কমলাপুরের গোলাপবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনে আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
এতে বেশ কয়েকজন দগ্ধ হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে ট্রেনের ওই বগিতে মানুষ আটকা পড়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কমলাপুরে প্রবেশের সময় ভাঙচুরকারীরা একটি কক্ষে আগুন দেয়। যাত্রীরা সাধ্যমতো ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় আগুনে দগ্ধ হন এক যুবক। কিছুক্ষণ দৌড়ে আগুনের ভেতরে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারলেন না।
পুড়ে জানালায় ঝুলে রইলেন বেনাপোল এক্সপ্রেসের যাত্রী
ট্রেন থেকে নেমে আসা এক যাত্রী বলেন, আমরা ওই যুবককে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। একপর্যায়ে, তিনি একটি জানালার কাছে এসে অক্সিজেন দিয়ে শক্তি সংগ্রহ করে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আমরাও তাকে বাইরে থেকে টেনে বের করে আনতে থাকি। তবে তার একটি পা পুড়ে যাওয়ায় তিনি পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করতে পারেননি। এছাড়া ট্রেনের জানালাও অর্ধেক বন্ধ থাকায় তাকে বের করা সম্ভব হয়নি।
এ অবস্থায় জানালার অর্ধেক বাইরে থাকা অবস্থায় হাজার হাজার মানুষের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ওই যুবক। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, ওই কক্ষ থেকে আগুন আরও তিনটি কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ইঞ্জিন গাড়িসহ ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে ১৯ ডিসেম্বর ঢাকাগামী ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সৈনিক ক্লাব-ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ট্রেনটিতে আগুন দেওয়া হয়। পরে একটি বগি থেকে মা-ছেলেসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন- নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার ছেলে ইয়াসিন (৩), রশিদ ঢালী ও খোকন।
রাজধানীতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার সূত্রপাত
এদিকে আগুনের ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রেনের জানালায় এক ব্যক্তি জ্বলছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বগি থেকে বের হওয়ার সময় তিনি দগ্ধ হন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির ডাকা হরতালের আগের রাতে এ ঘটনা ঘটে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রতিদিন ৬ জানুয়ারি সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
সরকার পতনের দাবিতে গত দুই মাস ধরে ধারাবাহিক হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এসব কর্মসূচিতে শতাধিক গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে মারা যায় সাধারণ মানুষ।
Tag:- রাজধানীতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন, রাজধানীতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ, পুড়ল যাত্রী, গোপীবাগে ট্রেনে আগুন, প্রাণ গেল যাত্রীর, পুড়ে জানালায় ঝুলে রইলেন বেনাপোল এক্সপ্রেসের যাত্রী, biborun.com, benapol axpexs trene agun